চট্টগ্রাম, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। বন্দরনগরী নামে পরিচিত এই শহরটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত। বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত পাহাড়, সমুদ্রে এবং উপত্যকায় ঘেরা চট্টগ্রাম শহর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যে প্রাচ্যের রাণী হিসেবে বিখ্যাত। ২০২২ সালের জনসুমারি অনুযায়ী চট্টগ্রাম শহর ও চট্টগ্রাম শহরের আশেপাশের উপ শহরের মোট জনসংখ্যা ২৫ লক্ষ ( প্রায় )। ঢাকার পর বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ শহর হচ্ছে চট্টগ্রাম। এখানে দেশের সর্ববৃহৎ বন্দর ছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। চট্টগ্রামে প্রচুর আধুনিক ও মানসম্মত হাসপাতাল রয়েছে, তন্মধ্য হতে সেরা হাসপাতালগুলো সম্পর্কে নিম্নে সংক্ষেপে বর্ণনা করা হয়েছে।
আসুন আমরা চট্টগ্রামের সেরা ১০ হাসপাতাল সম্পর্কে জেনে নিই।
এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম, এটি এভারকেয়ার গ্রুপ এর একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। এভারকেয়ার গ্রুপ বিশ্বাস করে যে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ, এটা প্রত্যেকের জন্য একটি মৌলিক অধিকার। তাই উক্ত গ্রুপটি স্থানীয় জনগণের চাহিদা পূরণের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা আনয়ন করেছে।এভারকেয়ার গ্রুপ ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, কেনিয়া এবং নাইজেরিয়া সহ আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে একটি সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা বিতরণ প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করে। এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রামের প্রথম ৪৭০ শয্যার মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি সুপার-স্পেশালিটি, টারশিয়ারি কেয়ার হাসপাতাল। এখানে ২৪ ঘন্টা জরুরি সেবা প্রদান করা হয়। এটি ৪,৯২০০০ বর্গফুট বিস্তৃত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং ৫০০ টিরও বেশি বিশ্বমানের চিকিৎসক দ্বারা সজ্জিত একটি হাসপাতাল।
ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল লিমিটেড, চট্টগ্রামের একটি জনপ্রিয় হাসপাতাল। তাদের লক্ষ্য একটি অনন্য নিরাময় পরিবেশ, শ্রেষ্ঠ পরিষেবা, এবং মানসম্মত ক্লিনিকাল ফলাফল নিশ্চিত করা। এটি বাংলাদেশের একটি বিশ্বস্ত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান এবং সকল কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নে ক্রমাগত অবদান রেখে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবা এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করছে। তাই উক্ত হাসপাতালটি চট্টগ্রামের শীর্ষ হাসপাতাল।
শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি (পিটিই.) লিমিটেড হল বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের মধ্যে একটি। যার বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগ জুড়ে অবস্থিত নয়টি আউটরিচ সেন্টার রয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম স্বদেশী স্বাস্থ্যসেবা গোষ্ঠী হিসাবে সিসিএলএল (CCLL) ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৮৪ সালে উদ্ভাবিত হয়েছিল, এবং ১৬ মে ১৯৮৪ সালে চট্টগ্রামে দেশের একমাত্র সমন্বিত রিসার্চ ল্যাবরেটরি হিসাবে কাজ শুরু করে। এটি বাংলাদেশে সমন্বিত এবং স্বয়ংক্রিয় ডায়াগনস্টিক ক্ষেত্রে একটি অগ্রণী উদ্যোগ ছিল। বর্তমানে শেভরনের পোর্টফোলিওতে রয়েছে, ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি ম্যানেজমেন্ট, হেলথকেয়ার টেকনিক্যাল সার্ভিস, ডায়াগনস্টিক মোডালিটি ডেভেলপমেন্ট এন্ড কমিশনিং, স্পেশালিস্ট ফিজিশিয়ান কনসালটেশন সার্ভিস, আধুনিক চক্ষু হাসপাতাল, গবেষণা কেন্দ্র এবং আরও অনেক কিছু।
পার্কভিউ হাসপাতাল, আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন একটি সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা। পার্কভিউ হাসপাতাল রোগীদের যত্নের সর্বোত্তম মান প্রদানের জন্য পরিচালিত।পার্কভিউ পরিবার, প্রতিদিনের প্রতিটি মিনিটে জীবনকে স্পর্শ ও সমৃদ্ধ করার লক্ষে, চট্টগ্রামের জনগণকে আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক পরিষেবা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সকল শ্রেণীর মানুষের মাঝে সাশ্রয়ী মূল্যে আধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষে হাসপাতালটি গঠিত। এটি চট্টগ্রামের একটি শীর্ষ হাসপাতাল।
ম্যাক্স হাসপাতাল, চট্টগ্রামের অন্যতম একটি হাসপাতাল। যেটি নিরাপদ উপায়ে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে। চট্টগ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত, ম্যাক্স হাসপাতাল সর্বোত্তম স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে ১ জুলাই ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে। সর্বস্তরের মানুষ এখানে গ্রাম ও শহর থেকে উচ্চমানের চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন, কেননা ম্যাক্স হাসপাতালে সর্বাধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তির ব্যবহার এবং উন্নতমানের চিকিৎসা প্রদানের লক্ষে অত্যন্ত দক্ষ ডাক্তারগণ নিয়োজিত রয়েছেন। হাসপাতালটি সবসময় তাদের রোগীর স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।
এপিক হেলথ কেয়ার, বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সেরা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। তারা আত্মবিশ্বাসের সাথে আধুনিক ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান করে। এই পরিষেবাগুলি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দক্ষ টেকনোলোজিস্ট দ্বারা প্রদান করা হয়। এপিক হেলথ কেয়ারের লক্ষ্য হল উচ্চ-মানের আন্তর্জাতিক মানের ডায়াগনস্টিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা। যার মাধ্যমে চট্টগ্রাম সহ অন্যান্য এলাকার মানুষদের চিকিৎসা চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে। এটি চট্টগ্রামের সেরা হাসপাতালগুলোর একটি।
সিএসসিআর (প্রাঃ) লিমিটেড , চট্টগ্রামের একটি সেরা হাসপাতাল। উক্ত হাসপাতাল এ প্রাথমিকভাবে, আল্ট্রাসনোগ্রাফি সেন্টারটি ১৯৮৮ সালের ৭ জুলাই, আজকের কিছু বিশিষ্ট চিকিৎসকের যৌথ প্রচেষ্টায় চালু হয়েছিল। এটি পরবর্তীতে চট্টগ্রামের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের যৌথ উদ্যোগে ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ সালে CSCR (Pvt) Ltd নামে একটি আধুনিক ডায়াগনস্টিক সার্ভিস এবং কনসালটেন্সি চেম্বারে রূপান্তরিত হয়। হাসপাতাল টি ভালো সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ও অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারা পরিচালিত একটি আধুনিক হাসপাতাল।
ন্যাশনাল হাসপাতাল চট্টগ্রাম এন্ড সিগমা ল্যাব লিমিটেড , চিকিত্সকদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি হাসপাতাল। ন্যাশনাল হাসপাতাল চট্টগ্রাম এন্ড সিগমা ল্যাব লিমিটেড রোগীদের সকল ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। ‘রোগীদের আগে রাখা’ শুধু তাদের মূলমন্ত্র নয়; এটা হাসপাতাল পরিচালনার এক মাত্র লক্ষই বটে। এখানে সর্বোত্তম সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অভিজ্ঞ ডাক্তারগণ রয়েছেন। এখানে সাশ্রয়ী মূল্যে সকল ধরণের স্বাস্থসেবা প্রদান করা হয়।
সার্জিস্কোপ হাসপাতাল লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা হিসাবে খুব ভাল একটি হাসপাতাল। রোগীদের সেবার জন্য অনেক ভালো স্বাস্থকর্মীগণ এখানে আছেন। এখানে ডায়াগনস্টিক পরিষেবার পাশাপাশি ব্লাডব্যাঙ্ক পরিষেবাও বিদ্যমান রয়েছে। এটি চকবাজার অলি খা মসজিদ ও কিশলয় কমিউনিটি সেন্টারের কাছে অবস্থিত, এটি ছাড়াও এই হাসপাতাল এর আরো শাখা রয়েছে। এটি একটি উন্নতমানের প্রাইভেট হাসপাতাল। নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তরের সকলশ্রেণীর মানুষ এই হাসপাতালে যান, কারণ সেরা ডাক্তারগণ এখানে সেরামানের চিকিৎসা পরিষেবা দেয়।
ডেলটা হেলথ কেয়ার, চিটাগাং লিঃ চট্টগ্রামের প্রথম সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যাহা চট্টগ্রামের কাতালগঞ্জে মির্জাপুল ও পাঁচলাইশ থানার মাঝে অবস্থিত। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চিকিৎসা সেবার সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ধারণাগুলোকে সংযোজিত করা এ হাসপাতালের রুটিন ওয়ার্কের অন্তর্ভূক্ত। রোগীদের সুচিকিৎসা ও যথার্থ সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১২০ বেড বিশিষ্ট হাসপাতালে রয়েছে – স্পেশালাইজড ইউনিট।